Sushobhan Mukherjee


Leave a comment

শুভ মহালয়া ২০১৪

মহালয়া মানে পিতৃপক্ষের শেষ আর দেবীপক্ষের শুরু ।

পৌরাণিক মতে, মহাভারতের মহাযুদ্ধে কর্ণ যখন মারা যান, তখন তার আত্মাকে খাদ্য হিসেবে গয়না উৎসর্গ করা হয় । বিস্মিত,বিমূঢ় কর্ণ এর কারণ জানতে চান দেবরাজ ইন্দ্রের কাছে । ইন্দ্র জানান যে কর্ণ তার জিবদ্দশায় কখনও পূর্বপুরুষের প্রতি খাবার, জল অর্পন করেননি, বরং তার দানের বিষয় ছিল শুধুই সোনা । আর সেই কর্মফলই তার প্রতি ফিরে এসেছে । কর্ণ তা জানতেন না বলে তাকে ১৬ দিনের জন্য পৃথিবীতে ফিরে আসতে সুযোগ দেওয়া হয়, যাতে তিনি পিতৃপুরুষকে জল এবং খাবার অর্পন করতে পারেন । এই সময়কালই পিতৃপক্ষ হিসাবে পরিচিত হয় ।

হিন্দুধর্ম মতে, তিন পূর্ববর্তী প্রজন্মের আত্মা পিতৃলোকে (স্বর্গ ও মর্তের মাঝামাঝি) অবস্থান করেন । পরবর্তী প্রজন্মের কারও মৃত্যুর পর যমরাজ আত্মাকে পিতৃলোকে নিয়ে যান আর প্রথম প্রজন্ম স্বর্গলোকে উন্নীত হন ।

মহালয়ার মাহেন্দ্রহ্মনে, শ্রী বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র মহাশয়ের স্তোত্র পাঠ সহযোগে ভক্তিমুলক গানের মাধ্যমে দেবী দূর্গার আবাহন বাঙালী জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিনত হয়েছে ।

মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীহ্মা মায়ের পুজার । এই দিনেই দেবীর চহ্মুদান করা হয় ।

মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দূর্গা সমস্ত অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক রূপে পূজিত । মহামায়া অসীম শক্তির উৎস ।

পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান ।  শিবের বর অনুযায়ী কোন মানুষ বা দেবতা কখনও মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না ।  ফলত আসীম হ্মমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতারিত করে এবং বিশ্বব্রম্ভান্ডের অধীশ্বর হতে চায় ।

ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব ত্রয়ী সন্মিলিত ভাবে “মহামায়া” এর রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের দশটি অস্ত্রে সুসজ্জিত সিংহবাহিনী দেবী দূর্গা নয় দিন ব্যাপি যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করলেন ।

আজকের লেখাটা আমি আমার বাবাকে উৎসর্গ করলাম পিতৃপক্ষের তর্পন হিসেবে । উনি ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে মারা যান । ওঁনার আত্মার শান্তি হোক ।

bnr1